শিক্ষার্থীদের হাতে মোবাইল তুলে দিয়ে সর্বনাশ করেছি : মুহম্মদ জাফর ইকবাল

ভার্চুয়াল ক্লাসের নামে শিশুদের হাতে মোবাইল ফোন তুলে দিয়ে সর্বনাশ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন লেখক ও শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি বলেন, করোনাকালে কী সর্বনাশ যে হয়েছে, সেটা খুব ভালো করে জানি। এখন সবাই বলছেন সর্বনাশ! বাচ্চাদের হাতে স্মার্টফোন দেওয়া যাবে না। অথচ করোনাকালে সবার হাতে একটা স্মার্টফোন তুলে দিয়েছি আমরা। সে স্মার্টফোন আর হাত থেকে নামেনি। এখনো আছে তাদের হাতে। সেটা দিয়ে কাজের কাজ কী হচ্ছে, সেটা আমি জানি না। এটা দিয়ে আমরা সর্বনাশ করেছি। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত ‘চ্যালেঞ্জড শিক্ষার্থী সম্মেলনে’ তিনি এসব কথা বলেন। চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করা দুই শতাধিক শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের নিয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গণসাক্ষরতা অভিযান।

শিক্ষার্থীদের হাতে মোবাইল তুলে দিয়ে সর্বনাশ করেছি : মুহম্মদ জাফর ইকবাল

ফেল করা শিক্ষার্থীদের কোনো দোষ-ত্রুটি নয় উল্লেখ করে ড. জাফর ইকবাল বলেন, যারা আজ এখানে এসেছে, তাদের কোনো দোষ নেই। অথচ তাদের পেছনে একটা সিল দিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, এরা পাস করতে পারেনি। এটা কিছু হলো? আমি শিক্ষক, লেখাপড়ার বিষয়ে সব জানি। তোমাদের পাঠ্যবইয়েও আমার নাম আছে দেখবে। অনেক বই লেখার সঙ্গে আমি জড়িত। এখনো কোনো বই লেখা নিয়ে কাজ করি। আমাদের দেশের লেখাপড়ার সমস্যাটা কী, তা খুবই ভালো করে জানি।’

আপনার প্রয়োজনীয় কোর্সটি ফ্রি ডাউনলোড করে নিন।

আলোচিত এই অধ্যাপক বলেন, এবার আমাদের দেশে তিন লাখ শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে। অথচ পৃথিবীতে এমন দেশও আছে, যেখানে তিন লাখ মানুষও নেই। তিন লাখ শিশুকে বলা হয়েছে যে, তোমরা পরীক্ষায় পাস করোনি। আমরা চাই, এ তিন লাখ শিশু যেন আবার পরীক্ষা দেয় এবং উত্তীর্ণ হয়।

সব শিক্ষককে প্রশিক্ষণ না দিয়েই ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন

ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামের ব্যবহার ক্ষতিকর উল্লেখ করে জাফর ইকবাল বলেন, আমি ফেসবুকের খুব বিরোধী। কারণ একটাই মাত্র জীবন। এটাকে তো নষ্ট করা যাবে না। আমি যদি বসে বসে একটা স্ক্রিনে তাকিয়ে দুনিয়া দেখি, সেটা কিছু হলো কি না? দুনিয়া কত সুন্দর, সেটা নিজের চোখ দিয়ে দেখবো নাকি শুধু স্ক্রিনে যতটুকু দেখাবে সেটা দেখবো?


অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেনন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও চলচ্চিত্র পরিচালক নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক, সাবেক শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান প্রমূখ।

Post a Comment

0 Comments